, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না শোক দিবসে সাঈদীর জন্য দোয়া করা সেই শিক্ষককে

  • আপলোড সময় : ১৭-০৮-২০২৩ ০১:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৮-২০২৩ ০১:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না শোক দিবসে সাঈদীর জন্য দোয়া করা সেই শিক্ষককে
এবার জামালপুরের সরিষাবাড়িতে শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া করা সেই শিক্ষক মাওলানা আব্দুল আজিজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, তার এই কাণ্ডে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হওয়ায় তিনি এলাকা ছেড়েছেন। পলাতক মাওলানা আব্দুল আজিজ চাপারকোনা মহেশচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ধর্ম বিষয়ক সহকারী শিক্ষক।

গত মঙ্গলবার ১৫ আগস্ট সকাল ১১ টায় উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবসে দোয়া পরিচালনা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য দোয়া করার পাশাপাশি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া করেন। এই ঘটনায় উপস্থিত সকলের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

গতকাল বুধবার ১৬ আগস্ট দুপুর ১২ টায় বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ শুরু করলে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীরের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে। সকল শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপনের আয়োজন করে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন, বক্তব্য-আমার চোখে বঙ্গবন্ধু এবং কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহীদদের প্রতি দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।  

দোয়ার এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের ধর্ম বিষয়ক সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মাওলানা আব্দুল আজিজ স্বাধীনতা বিরোধী ও আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে দোয়া করেন। এরপর থেকেই তিনি এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়ে রংপুরে চলে গেছেন। তার এমন কাণ্ডে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পরেশ চন্দ্র সাহা বলেন, অতীত থেকেই প্রধান শিক্ষকের আচার আচরণ বিএনপি ও জামাতের মতো। প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই অনেক দুর্নীতি করে আসছেন। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক আব্দুল আজিজের কাজটি নিয়ে আমরা আইনি ভাবে বিচার চাই।

এ বিষয়ে ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পিজুস বসাক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে হেড মাস্টার ও সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আজিজ স‌্যার সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাঈদীকে নিয়ে দোয়া করেছেন। আজিজ স‌্যার এর আগে জামাতের রাজনীতি করেছেন।

এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরেই আজিজকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।  তিনি এমন কাজ আর করবেন না বলে জানিয়েছেন। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক জানিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফজলুল হক বলেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাহেব আমাকে সকালে অবগত করেছেন। যেহেতু জাতীয় শোক দিবস, শোক দিবসের মর্যাদা আছে, সেই মর্যাদা অনুযায়ী পালনের কথা। এখানে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে কোন অনুষ্ঠানে দোয়া করার সুযোগ নাই। তার বিরুদ্ধে শোকজ ও প্রয়োজনীয় ব‌্যবস্থা নেয়ার জন‌্য নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি।
সর্বশেষ সংবাদ
‘গণহত্যার জন্য যাদের অনুশোচনা নেই, তারা রাজনীতি করারও অধিকার হারিয়েছে’

‘গণহত্যার জন্য যাদের অনুশোচনা নেই, তারা রাজনীতি করারও অধিকার হারিয়েছে’